মঈনুল হাসান পলাশ
গত ৫মে রাত হতেই পুরো কক্সবাজার শহরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছিলো সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। চলছিলো যানবাহন তল্লাশী ও জিজ্ঞাসাবাদ। পরদিন ৬ মে ভোর হতেই শহরে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে যায়। যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। পুরো শহরে তখন এক ধরণের কঠোর হরতালের মতো পরিস্থিতি। অনেকে মজা করে বলছিলেন,এই সুযোগে হরতাল ডাকতে পারতো বিএনপি।
এতো নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণ ছিলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বহুল আকাংখিত কক্সবাজার সফর।
এর আগেও তিনি কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এসেছিলেন। বিএনপির শাসনামলে বেগম খালেদা জিয়াও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কক্সবাজার সফর করেন। তবে কোনো সময়েই এই ধরণের নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি কক্সবাজারে।
মূলত অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনের উপর হামলার ঝুঁকি সর্বোচ্চ পর্যায়ে বলে অভিমত নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের।
৬মে শনিবার পুরো কক্সবাজার শহরে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়ে মানুষ। ভ্যাঁপসা গরম আর যান চলাচল বন্ধ থাকায় শহরবাসীর ভোগান্তি ছিলো সীমাহীন।
এই ভোগান্তির কারণে অনেক সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে। ভিন্নদলের/মতের লোকজন বিরুপ সমালোচনা করেছে।
স্বাধীনতার পর থেকে এই প্রথমবার একসাথে এতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প উদ্বোধন করতে কোনো প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার এলেন। সেদিন দুপুর থেকে ফেসবুক এবং বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর একটি ছবিতে সয়লাব হয়ে যায়। কোনো প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পানিতে পা ভেঁজানোর ঘটনা এই প্রথম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারকে একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরীতে রুপান্তর করতে চেষ্টা করছেন, এটা এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কক্সবাজারবাসীর সৌভাগ্য যে,রাজধানী ঢাকার পরে দেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহর এখন কক্সবাজার। কোনো জেলা শহরকে ঘিরে এতোগুল্ োউন্নয়ন প্রকল্প এবং সম্ভাব্য উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নজির ঢাকার পরে কক্সবাজার বাদে তৃতীয় কোনো জেলায় নেই বর্তমান সময়ে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ইনানী সৈকতে সাগরের পানিতে পা ভিঁজিয়ে হাটছিলেন, বিশাল সাগরের অনন্য সৌন্দর্য্য দেখছিলেন মুগ্ধ হয়ে,তখন নিশ্চিত তার মাথায় অনেক চিন্তা খেলা করছিলো। তিনি অনুভব করছিলেন কক্সবাজারের সৌন্দর্য্য আর সম্পদের গুরুত্ব। এরপর নিশ্চই কোনো মন্ত্রী বা এমপি বা আমলার কাছে তদবীর করতে হবে না, প্রধানমন্ত্রীকে কক্সবাজারের পর্যটন উন্নয়নের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য। শনিবার শহরবাসী যে ভোগান্তি স্বীকার করেছেন তার বিনিময়ে অমূল্য একটি সম্ভাবনার দরজা খুলে গেলো। প্রধানমন্ত্রী চিন্তায় গভীরভাবে জায়গা করে নিলো কক্সবাজার। আর তাই, আমাদের সেই দিনের ভোগান্তিকে আমরা কক্সবাজারের বৃহত্তর স্বার্থে আত্মত্যাগ করলাম না হয়।
ফুটনোট:গত ৬মে শনিবার শহরবাসীর ক্ষোভ কমানোর জন্য কক্সবাজারের আওয়ামী লীগ নেতারা কি একটা বিবৃতি দিয়ে জনগণের কাছে ভোগান্তির শিকার হবার কারণে দুঃখ প্রকাশ করতে পারতেন না? আসলে গঁদবাধা রাজনৈতিক আচরণের বাইরে ভিন্ন কিছু চিন্তা করার ক্ষমত্ইা তাদের নেই।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক,দৈনিক সমুদকন্ঠ।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।